প্রায় প্রতিদিনই তুমি আমার কাছে আসো। আমার আত্মার সঙ্গে তোমার যে গভীর মিল! তা আমি প্রতি মুহূর্তেই উপলব্ধি করি। আমি বুঝতে পারি তোমার মনের মধ্যে লুকানো সব ব্যথা, কালো মেঘ হয়ে জমে থাকা যত কথা, সব কিছু। কিন্ত কখনো বলতে পারনা। কখনো বা কারো সঙ্গে একটু বলতে চাইলেও নিজের ব্যক্তিত্বের কথা ভেবে চেপে যাও। মাঝে মধ্যে তোমার সঙ্গে দু’একজন বন্ধু মিললেও তোমার মধ্যে লুকিয়ে থাকা শত কষ্টের মধ্যে তাকে খুব কাছের করে নিতে পারনা। প্রথমত, নিজের সেই সীমাবদ্ধতা, পেছনে ফেলে আসা দিন গুলোতে বন্ধু নামের মানুষের মনের ভয়াল আকৃতি দেখা প্রভৃতি।
আমি জানি, তোমার দূ:খ, মনের কষ্টের শেষ নেই। মুহূর্তের জন্য তুমি একটু স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলতে পারনা। তোমার নীতি, চিন্তার কাছে তোমার বন্ধু নামের সঙ্গীরাও আজ তোমাকে ত্যাগ করতে চায়। সর্বগ্রাসী অসভ্যদের পদ তলে তুমি নিজেকে লুটাতে চাও না। আমি জানি। তাই তো, তুমি আমার কাছে আসো। কিন্ত, কখনোই তুমি মুখ ফুটে কিছু বলনা। কিন্তু আমি যে সব বুঝি। তুমি আমার কাছে এলে কাটিয়ে দাও ঘন্টার পর ঘন্টা। আমার পাশ থেকে তোমার উঠতে ইচ্ছে হয় না। ইচ্ছে হয়, যেন বেলা শেষে সারা রাত, আমরা দুজনে এই নিভৃত প্রান্তে কাটিয়ে দিতে পারতাম। তোমার না বলা কথাগুলো আমাকে প্রাণ খুলে বলতে। মাঝে মধ্যে তোমার লাজুক ঠোঁটে চুমো কেটে শিহরণ জাগিয়ে তুলতাম তোমার সারা শরীরে। কিছুক্ষণের জন্য তোমার প্রাণটা ভরে যেত আমার নির্মলতায়। কিছু ক্ষণের জন্য ভুলে যেতে তুমি নিজেকে। মনের অজানা জানালা থেকে মুখ ফুসকে গিয়ে বেড়িয়ে আসত তোমার মৃদু হাসিটি। হৃদপিন্ডটি ভরে উঠত বাতাস ভর্তি বেলুনের মত।
তুমি বিশ্বাস করো, এই পৃথিবীতে কেউ তোমাকে বোঝে না। বোঝার চেষ্টাও করে না। তাই তো, তোমার শরীরে মাঝে মধ্যে রাগে ক্রোধে গিজ গিজ করে। মেজাজটাও খিটখিটে থাকে প্রায়ক্ষণ। সেজন্য তুমি দায়ী নও। বিধাতা পুরুষ ছাড়া আর কাকেউ বা দায়ী করা যায়? কারণ, ভাগ্য লিখনের কলমটা যে তাঁর হাতে।
তোমার মনে অনেক কষ্ট আমি জানি। প্রতিদিন কত মানুষের কষ্ট যে আমাকে শুনতে হয়। কত কথা, কত গান যে আমার মধ্যে রয়েছে তা তুমি কি জান? আমারও যে যৌবন আর নেই। এখন আর প্রান খুলে কেউ কন্ঠে তোলেনা-পদ্মার ঢেউ রে,... মোর শুন্য হৃদয় পদ্ম নিয়ে যা..। তার পরিবর্তে এখন দেখি জলদস্যু, চোরাকারবারীদের আনাগোনা,নির্বিচারে মানুষ খুন, কত কী। আমিও তোমার মত এখন
মানুষ রূপী অমানুষদের কীর্তি দেখতে দেখতে শক্ত হয়ে গেছি। কিন্ত তবুও আমি যে তোমার মত শক্ত থাকতে পারিনা। মিথ্যে হলেও যে আমাকে সবার সঙ্গে সব কিছুর না দেখার অভিনয় করে যেতে হয়।
তবুও তোমাকে দেখলে আমি খুব খুশী হই। আত্মার বাঁধনটাও যেন আরো দৃঢ় হয়ে যায় আমার। তোমাকে কেউ না বুঝুক আমি তো বুঝি। আমি তোমার মনের আদর্শ, বিশ্বাস সারাক্ষণ অনুভব করি। তাই তো, তোমাকে আমি এত ভালবাসি। তোমার স্পর্শে আমার শরীরের সবকিছুতে শিহরণ লেগে যায়। আমি কিছুক্ষণের জন্য স্তিমিত হয়ে যাই। খুঁজে পাই আমার শান্তির পরশ। তোমার স্পর্শে আমার আবেগের জালটা আরো যেন বিস্তার হয়। তাই তো, তুমি এসো, প্রতিদিন এসো আমার কাছে। তোমার ব্যস্ততম প্রহর কাটিয়ে অবসরে তুমি এসো। যখন, দুজনের প্রাণের কথা বলা যায়। মন খুলে গাওয়া যায়। আমিও গাইব, তুমিও গাইবে আমার সঙ্গে প্রান খুলে। সুরের বন্যায় মাতিয়ে তুলব আমাদের চারপাশ। রাত গভীরে কথা বলব। চন্দ্রিমা রাতে চাঁদের আলোয় আলোকিত হব আমরা দু'জন। এক সময়ে তুমি আমাকে চুম্বন করে চলে যাবে তোমার গন্তব্যে। আবার একাকী হব আমি।
আমার কাছে আসা যায়, সময় কাটানো যায় মধু ভরে। কিন্ত, থাকাতো যায় না! কারণ, আমি যে শুধুই একটি নদী।
০৪ এপ্রিল - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৪ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“ডিসেম্বর ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।
প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী